দেশের মানুষ যখন দু'বেলা পেট ভরে ভাত ও ত্রাণের জন্য প্রহর গুনছে, প্রধানমন্ত্রী তখন বিলাস যাপন করতে ভাড়া করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দামি হোটেল, যার ভাড়া দৈনিক ২ কোটি টাকারও বেশি

লন্ডন সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বড় ধরনের বিক্ষোভের মুখে ফেলতে চায় যুক্তরাজ্য বিএনপি। নিখোঁজ এম. ইলিয়াস আলীর সন্ধানসহ নানা ইস্যুতে এ বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লন্ডনে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হবে। মুল সড়ক ও গেট দিয়ে তাকে অলিম্পিক ভিলেজে যেতে দেয়া হবে না।
যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মাসের শেষের দিকে শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য আগমণকে প্রতিহত করতে তাকে যুক্তরাজ্যে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকে যাতে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা না হয় তার জন্য বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী সহ সর্বোচ্চ মহলে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

যুক্তরাজ্যের ১৮দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা কালো পোশাক পরে সে রাস্তায় বিক্ষোভে মুখরিত করে রাখবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী স্যাম্পন ক্রস স্টেশনের পাশে যে হোটেলে থাকবেন তার সামনে বিক্ষোভ করবে বিএনপি। এ জন্য লন্ডন পুলিশের অনুমতি নেয়া হয়েছে। সেখানে তাকে কালো পতাকা ও লাল কার্ড প্রদর্শন, ডিম ও টমেটো নিক্ষেপ এবং ঝাড়ু-জুতা মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।

মালেক আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বিঘ্নে টাওয়ার হ্যামলেটস যেতে দেয়া হবে না। কোন দিকেই স্বস্তিতে যাতায়াত করতে দেয়া হবে না। এবার তার
লন্ডন সফর করে তোলা হবে বিব্রতকর। এমএ মালেক বলেন, দুর্নীতির কারণে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন চুক্তি বাতিল করেছে। সরকারের সে দুর্নীতির রেশ প্রকাশ পাচ্ছে লন্ডনে।
এদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেওয়া কর্মসূচি প্রতিরোধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কোন কর্মসূচি না নিলেও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে তারাও নিয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। প্রবাসীদের নামে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে তারা ব্রিটেনের একটি ফাইভ স্টার হোটেলে আয়োজন করেছে ইফতার মাহফিল ও সমাবেশ।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল বিএনপি’র আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে লন্ডনের কমিউনিটিতে চলছে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা। অলিম্পিককে কেন্দ্র করে প্রায় ২শ’ দেশের রাষ্ট্র প্রধান লন্ডন আসছেন। পাশাপাশি অলিম্পিক কাভার করতে লন্ডন সফর করছেন সারা বিশ্বের প্রায় ২১ হাজার সাংবাদিক। প্রায় ২শ’ দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই বিক্ষোভের মুখে পড়বেন, বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি খবরের রসদ হিসেবে গুরুত্ব পেতে পারে, এমনই আশঙ্কা করছেন অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লটবহরের জন্য যে হোটেলটি বুকিং করা হয়েছে সেটা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দামি হোটেলগুলোর একটি। লন্ডনের পাঁচ তারকা রেনেসন হোটেলটির পুরো একটি ফ্লোর ভাড়া করা হয়েছে। ওই ফ্লোরের প্রতিদিনের ভাড়া দেড় লাখ পাউন্ড। যা বাংলাদেশী টাকায় ২ কোটির বেশি। একটি ফ্লোরে রয়েছে ৭০-৮০টি রুম। এক একটি ইকোনমিক রুমের ভাড়াই সর্বনিম্ন ৮০০ পাউন্ড। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে কারের বহর ভাড়া করা হয়েছে সেটাও অনেক ব্যয়বহুল। প্রতিদিনের গাড়িবহরের ভাড়া হচ্ছে ৭৬ হাজার পাউন্ড। যা বাংলাদেশী টাকায় এক কোটি টাকার বেশি। এমএ মালেক বলেন, একটি গরিব দেশের প্রধানমন্ত্রীর এ উচ্চ বিলাসী আচরণ মেনে নেয়া যায় না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাংলা চলচ্চিত্রের সংকট ও সীমাবদ্ধতাঃ দুইটি বাংলা চলচ্চিত্রের পর্যবেক্ষণ ও তুলনামূলক পর্যালোচনা

কথাগুলো 'সাম্প্রদায়িক'

Coverage of Local Development Issues in Regional Newspaper of Chattogram